স্টাফ রিপোর্টার: শেরপুরের শ্রীবরদীর তাতিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার, প্রিন্টার ও ইউপিএসসহ যাবতীয় ডিজিটাল ডিভাইস সচিবের বাসায় নেওয়ায় প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছেন সেবা গ্রহণকারীরা। দীর্ঘদিন যাবত এসব মালামাল বাসায় নেওয়ায় জন্ম নিবন্ধন সহ বিভিন্ন সেবা নিতে আসা লোকজন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
রোববার (২২ অক্টোবর) ভুক্তভোগী ও হয়ারানীর শিকার লোকজন এ অভিযোগ তুলেন। অভিযোগকারীরা জানান, শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার তাতিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শারমিন আক্তার শাহিনা দীর্ঘদিন যাবত নানা অনিয়ম করে আসছেন। ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি কম্পিউটার, প্রিন্টার ও ইউপিএস সহ বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস তার বাসায় নিয়ে গেছেন। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন জন্ম নিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনসহ সেবা নিতে আসা লোকজনের। অভিযোগে প্রকাশ, কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর গ্রামের ইদু মিয়ার ছেলে আক্কাছ আলী পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি গেরামারা গ্রামের বাসিন্দা দেখিয়ে তাতিহাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেন জন্ম নিবন্ধন। তিনি বলেন, প্রায় দুই মাস যাবত জন্ম নিবন্ধনের জন্য ঘুরছি। আজ জন্ম নিবন্ধন হাতে পেলাম। তিনি আরো বলেন, জন্ম নিবন্ধনের জন্য সচিবকে ৪শ টাকা দেই। ট্যাহা কম হওয়ায় আমারে দুই মাস ঘুরায়। আক্কাছ আলীর মতো প্রতিদিন ইউনিয়ন পরিষদে ঘুরছেন অনেকে। ভুক্তভোগীরা বলেন, তাকে জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র ও অতিরিক্ত টাকা দেয়ার পর বাসায় নিয়ে যান। তিনি তার মনমতো দুই তিন সপ্তাহ পর জন্ম নিবন্ধন করে দেন। এতে ছেলে মেয়ে স্কুলে ভর্তি ও চাকরি সংক্রান্ত সহ নানা কাজে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ । ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন সংগ্রহ করে সরকার নির্ধারিত ৫০ টাকার পরিবর্তে প্রতিজনের কাছ থেকে নিচ্ছেন ৪শ থেকে ৫শ টাকা। ইউপি সদস্যরা বিরক্তভোত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, কম্পিউটার সহ বিভিন্ন মালামাল তার বাসায় রেখেছেন। এতে যারা সেবা নিতে আসছেন তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানান, রহস্যজনক কারণে অন্য ইউনিয়ন, থানা বা জেলার বাসিন্দাদের স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে দিচ্ছেন জন্ম নিবন্ধন। এতেও নিচ্ছেন অতিরিক্ত টাকা।
এ ব্যাপারে কথা হয় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শারমিন আক্তার শাহিনার সাথে। এসব অনিয়ম ও অতিরিক্ত টাকা নেয়ার ব্যাপারে অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমার কাজের সুবিধার্থে কম্পিউটার, প্রিন্টার ও ইউপিএস আমার বাসায় রেখেছি। এটা সবাই জানে। তাতিহাটি ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো, আব্দুর রউফ মিয়া বলেন, বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানানো হয়েছে। তবে কেউ সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফতেখার ইউনুস বলেন, জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে কম্পিউটার সহ বিভিন্ন মালামাল দেয়া হয়েছে। এসব মালামাল ইউনিয়ন পরিষদে থাকার কথা। বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।