কবি ও ঔপন্যাসিক এরশাদ আহমেদ এর “বসন্ত বরাঙ্গনা” কাব্যগ্রন্থের অন্যতম কবিতাগুলোর একটি কবিতা “মন সরলা”। কবিতাটিতে কবি অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে সুন্দর পৃথিবী গড়ার জন্য পৃথিবীর সকল মানুষকেই মানুষ হওয়ার জন্যে আহবান করেছেন। কবিতাটি পড়ে এও অনুধাবন করা সহজ হবে যে মানুষের ঊর্ধ্বে কখনোই ধর্ম নয় বরং মানুষের কল্যাণের জন্যেই যুগে যুগে অবতারগণ অগণিত ধর্মের বাণী নিয়ে এসেছে।
মন সরলা
এরশাদ আহমেদ
মন সরলা স্বর্গপাড়ায় বসে আছো নি
স্বর্গ নদীর ঘাটে আমি প্রেম করবা নি!
মধু চন্দনের প্রসূত শাখে
ঐ যে মধুসখা ডাকে
মন সরলা আমায় তাকে-হাতটি ধরবা নি!
মন সরলা স্বর্গবালা অঙ্গে রূপের ঢেউ
তনুনীরের পদ্মনাভে নিরঞ্জনা কেউ,
সুরাঙ্গনার মধুর সুরে
বরাঙ্গনা প্রেমে মরে
প্রেমেই স্বর্গ, প্রেমেই ঈশ্বর ;প্রেমে মরবা নি!
মন সরলা মোল্লা পাড়ায় কখনো যেও না,
স্বর্গে তারা আগুন ঢালে থাকতে পারবা না-
তাদের খোদা বড়োই কঠিন
তারে পাইবা না কোনদিন
স্বর্গেই থাক ঐ নরকে তুমি মরবা নি!
স্বর্গে থাক মন সরলা প্রেম-ই স্বর্গরাজ
তোমায় দেব প্রেম তরঙ্গ সুর রজনিহাস!
গলায় দেব বসন্ত সরা
পান করিবে প্রেম মদিরা
ভন্ড তারা এখনো যারা স্বর্গে আসেনি!
মন সরলা ধর্ম ফেল স্বর্গে দাও ঘুম-
স্বর্গের চেয়ে ধর্ম কি গো স্বর্গে দাও চুম,
ধর্ম সে-তো মানুষ মারে
আমা তোমা কাউরে ছাড়ে
ধর্মের বলি মানুষ খুনে তাহা দেখ নি!
মন সরলা শরাব নদী ঐ যে দেখ দু’টি
ধর্ম শরাব স্বর্গ শরাব তুমি নেবে কোনটি?
ধর্ম মদিরা হিস্র! কদু…
স্বর্গ মদে প্রেম জাদু
একবার খেলে মধুপুরী খোঁজে পাইবা নি!
মন সরলা ধর্ম কি গো আমি বুঝলাম না,
স্বর্গ ফেলে ধর্ম পাড়ায় তারে খোঁজলাম না।
খোদার সরা ধর্ম কোথায়
সব মানুষে (প্রাণে) দেখা যায়
সবাইরে সে ভালবাসে আহার জোগায় নি!