নিজস্ব প্রতিবেদক : শুক্রবার (১৯ মে) রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের বোয়ালদাহ গ্রামের কান্তিনগর এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের দুই জন নিহত সহ আটজন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । বর্তমানে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আহতদের মধ্যে ৭ জন কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যান। নিহতরা হলেন, বোয়ালদাহ গ্রামের কান্তিনগর এলাকার মৃত আবুল খায়েরের ছেলে ওমর আলী (৬৫) এবং একই এলাকার সুকরান সর্দারের ছেলে মিরাজ সর্দার (৫০)।
এ ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন: সাইদুল রহমানের স্ত্রী আনজেরা খাতুন ৫০, মৃত আলীকের ছেলে কারিফুল ইসলাম(২৭), সাইদুল রহমান ছেলে আনারুল (৩০), মৃত ওমর আলীর ছেলে জাহিদ (৩২), আমিরুল ইসলামের ছেলে আল মিরাজ (১৭) মৃত তোবার ছেলে বাবলুর, সাবেদ গাইন ছেলে মান্নান (৪৫), খালেকের ছেলে আবিদুল (৩২)। এদের মধ্যে আহত খালেকের ছেলে আবিদুল (৩২) প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ে বাড়ি চলে যান। স্থানীয়রা জানান, হরিপুর বোয়ালদহ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জুয়া খেলা হচ্ছে। আজ কেরাম খেলাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়।
এতে ওমর আলী ও মিরাজ সর্দার নামে দুই পক্ষের দুইজন নিহত হন। ঘটনার শুরুতে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সংবাদ দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে রাত ১০টার দিকে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র হাতে একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে ওমর আলী ও মিরাজ সর্দার নামে দুইজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের আটজন আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় ওমর আলী ও মিরাজ সর্দারকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম মুশতাক হোসেন মাসুদ বলেন, হঠাৎ করে কেরাম খেলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। তবে তাদের মধ্যে কোনো পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা এ বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহাদৎ হোসেন জানান, সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের বোয়ালদাহ গ্রামের কান্তিনগর এলাকায় সাহেব আলীর মুদির দোকানে ক্যারাম বোর্ড এবং আইপিএল ক্রিকেট খেলাকে নিয়ে জুয়া চলে আসছিলো, এতে বাধা দিলে সাহেব আলির লোকজন কয়েকদিন আগে মিরাজ নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করে। এরই জের ধরে আজ রাতে মিরাজের লোকজন সাহেবের দোকানে হামলা চালায়। এসময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মিরাজসহ উভয় পক্ষের দুজন মারা যায়। নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।