নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া কলেজের শিক্ষার্থী মিফতাহুল জান্নাত মিতার মৃত্যুর খবরটি সঠিক নয়। তিনি বেঁচে আছেন, ভালো আছেন। এক ভিডিও বার্তায় বিষয়টি তিনি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে অন্তত ৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে ঢাকায় ২ জন, রংপুরে একজন এবং চট্টগ্রামে ৩ জন।

রংপুরে নিহত শিক্ষার্থীর নাম আবু সাঈদ। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার দেশের অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) এলাকাও রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। এ সময় বেগম রোকেয়া কলেজের ছাত্রী মিফতাহুল জান্নাত মিতা আহত হন।

এরপর তার একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হয়, রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে চোখে গুলি লেগে নিহত হয়েছেন। তবে মিফতাহুল জান্নাত মিতা এক ভিডিও বার্তায় জানান, তিনি মারা যাননি, বেঁচে আছেন। তবে চোখের পাশে ছররা গুলি (রাবার বুলেট) লেগে আহত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: রোকেয়া-বঙ্গমাতাসহ ঢাবির ৪ ছাত্রী হলকে ছাত্র রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা!

১৭ বছর বয়সী মিফতাহুল জান্নাত মিতা বর্তমানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে আছেন। তিনি রংপুরের আনন্দলোক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলামের মেয়ে।

চলতি বছর রংপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছেন। বর্তমানে বেগম রোকেয়া কলেজের ছাত্রী। তার বাড়ি রংপুর সিটি করপোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডের কোবারু কলেজপাড়া এলাকায়।

ভিডিও বার্তায় মিতা বলেন, ‘আমার নাম মিফতাহুল জান্নাত মিতা। বেরোবির কোটাবিরোধী আন্দোলনে আমার মৃত্যুর একটি গুজব ছড়িয়েছে। আমি বর্তমানে ঠিক আছে। আমি আন্দোলনে ছিলাম এবং সামনের সারিতেই ছিলাম। তখন আমরা বেরোবির ১ নম্বর গেটে অবস্থান করছিলাম। পুলিশ হঠাৎ আমাদের দিকে রাবার বুলেট ছোড়া শুরু করে। আমার দুটি রাবার বুলেট লাগে। আমার চোখের ওপরে এবং নিচে গুলি লাগে। আমি আপাতত ঠিক আছি।’

মিতা আরও বলেন, ‘আমার দাবি একটাই, আমি যখন রক্ত দিয়েছি, আরও রক্ত দিতে প্রস্তুত। আমি এই আন্দোলনের শেষ দেখতে চাই। আমি আমার ন্যায্য অধিকার চাই। মুক্তিযোদ্ধারা যেই চেতনা দিয়ে গেছেন, আমি সেই চেতনায় বাঁচতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার দেশের মুক্তিযোদ্ধারা বৈষম্য নিয়ে যুদ্ধ করার পরও কেন এখন তাদের নামে বৈষম্য করা হচ্ছে? আমি চাই এই বৈষম্য দূর হোক, সবাই সমান অধিকার পাক। আমি আবারও আন্দোলনে নামব। শুধুমাত্র রাবারের গুলি দিয়ে আমাকে থামিয়ে রাখা যাবে না। আমি আবারও রাজপথে নামব। দরকার হলে আবারও রক্ত দিব। সবাই আমাদের সমর্থন দেবেন এবং এটাকে গণ অভ্যুত্থানে রূপ দেন।