ময়মনসিংহের ভালুকায় শ্রমিক কর্তৃক কারখানায় অবৈধভাবে কাজ বন্ধ রাখা ও অন্যায় দাবী-দাওয়া উত্থাপন করার কারণে এল’ এসকোয়্যার লিমিটেড নামে একটি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক বেকার হওয়ার সম্ভবনা।
১০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) রাতে কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন, মানব সম্পদ ও কমপ্লায়েন্স) মোঃ আমীর আলী স্বাক্ষরিত এক নোটিশ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
লিখিত নোটিশ জানা যায়, উপজেলার হবিরবাড়ী স্কয়ার মাস্টারবাড়ী এলাকায় এল’এসকোয়্যার লিমিটেড শ্রমিক কর্তৃক কারখানায় অবৈধভাবে কাজ বন্ধ রাখা এবং অন্যায় দাবি-দাওয়া উত্থাপন করার কারণে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ আগামী ১১ই মার্চ ২০২৫ইং তারিখ হতে অনিদিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্বান্ত গ্রহন করেছে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কারখানার সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। কারখানায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করতেন।
এর আগে, ১০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) দুপুরে বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাসহ ছয় দফা দাবিতে প্রায় এক ঘন্টা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, মডেল থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শ্রমিক ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পাঁচ দাবি কর্তৃপক্ষ মেনে নেন এবং শ্রমিকদের অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু ঈদ বোনাসের বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় শ্রমিকেরা মহাসড়ক ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান এবং পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। এক পর্যায়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হলে সংঘর্ষে রুপ নেয়। শ্রমিকেরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ লাঠিপেটা ও অন্তত দশটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষে শিল্প পুলিশ-৫ এর এডিশনাল এসপি ফকরুজ্জামান জুয়েল সহ ১৩জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া কমপক্ষে ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
শিল্প পুলিশ ময়মনসিংহ-৫ এর পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, কারখানার শ্রমিকেরা ছয় দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করলে কারখানা কর্তৃপক্ষ পাঁচ দাবি মেনে নেয়। কিন্তু কারখানায় কোনো শ্রমিক এক বছর কর্মরত না থাকলে ঈদ বোনাস প্রাপ্য হবেন না, এমন তথ্য জানার পর শ্রমিকেরা সড়কে শুয়ে পড়ে এবং ল অন্যায্য শর্তের প্রতিবাদ জানান। এতে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়। পরে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ বাধ্য হয়ে লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’ পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন।