প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন শুধু দপ্তরের ফাইলে সীমাবদ্ধ নয় জনগণের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ানোই আসল নেতৃত্ব। তারিই জীবন্ত প্রমাণ ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। অবিরাম বর্ষণের দিন, ছাতার নিচে ভিজে গিয়েও যিনি নামলেন রাস্তায় শুধু দায়িত্ব নয়, মানবিকতার তাগিদে।
জানা যায়, মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে যখন অধিকাংশ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে, তখন ইউএনও মাহমুদ শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোর যানজট নিরসনে নিজেই নেমে পড়েন মাঠে। আশ্চর্যের বিষয়, তাঁর সঙ্গে ছিল না রেইনকোট, ছিল না বিলাসবহুল সুরক্ষা। একটি মাত্র ছাতা হাতে, তিনি ছুটে যান এক মোড় থেকে অন্য মোড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা করতে, জনদুর্ভোগ লাঘবে নিজ হাতে হাল ধরতে। শুধু পরিস্থিতি পরিদর্শন নয়, তিনি চালকদের সচেতন করেন, পথচারীদের নিরাপদে চলাচলে সহায়তা করেন এবং যানচলাচলের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। এ সময় এমনকি ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে তিনি প্রমাণ করেন দায়িত্ব মানেই মাঠে সক্রিয় উপস্থিতি।
অভিযানে অপ্রয়োজনীয়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহন, লাইসেন্সবিহীন যান চলাচল এবং অননুমোদিত পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও জরিমানা করা হয়। ইউএনও’র এই দ্রুত, দৃঢ় ও জনমুখী পদক্ষেপে নাগরিকদের মাঝে স্বস্তির পরশ ছড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে তাঁর এই উদ্যোগ ব্যাপক প্রশংসা ছড়িয়েছে। অনেকেই একে বলেছেন, “মানবিক নেতৃত্বের আদর্শ উদাহরণ।” কেউ মন্তব্য করেছেন, “ইউএনও হাসান শুধু প্রশাসক নন, তিনি জনগণের প্রকৃত অভিভাবক।”
সচেতন নাগরিকদের দাবী, এই দৃশ্য হয়তো কেবল একটি দিনের ঘটনা, কিন্তু এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। কারণ, প্রশাসনের এমন মানবিক রূপ খুব বেশি দেখা যায় না। যখন পদ নয়, দায়িত্ববোধ হয়ে ওঠে কারও পরিচয় তখনই জন্ম নেয় এমন গল্প, যা বছর পেরিয়ে যুগান্তরের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।
এই ব্যতিক্রমী অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ অকপটে বলেন, “ভালুকার প্রতিটি মানুষ আমার পরিবারের অংশ। দুর্যোগে কিংবা স্বাভাবিক অবস্থায় আমি তাদের পাশেই থাকবো। অফিসের চার দেয়ালে বসে জনসেবা সম্ভব নয়। মাঠে নামতেই হবে।”