আবুনাঈমরিপন : নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, সারাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭০২ দুটি গভীর ও অগভীর নলকূপ বরাদ্দ পায় তারা। এর মধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে ৩৫১ টি এবং বাকিগুলো উপজেলা ওয়াটসন কমিটির মাধ্যমে বিতরণ করার নিয়ম রয়েছে। উপজেলা ওয়াটসন কমিটিতে কে কে আছেন? এই প্রশ্নের জবাবে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী রেগে গিয়ে বলেন, ‘এসব দিয়ে আপনি কি করেন!’
এসব প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করে ঠিকাদারদের বিল পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে জানার জন্য উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও সহকারী প্রকৌশলী তানজিনা আক্তার উপকারভোগীদের নামের তালিকা এবং তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। বারবার বলার পরও তিনি তথ্য না দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন নেতার নাম উল্লেখ করে তার সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। একাজগুলো কমপ্লিট করার জন্য তিনজন ঠিকাদার নিয়োজিত আছেন বলে তিনি জানান। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারদের নাম জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে অস্বীকার করেন। অভিযোগ উঠেছে এই প্রকল্পের নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অফিসের কর্মকর্তা তানজিনা আক্তার, ঠিকাদার ও অফিসের কতিপয় লোক। অপরদিকে এই কর্মকর্তা একই স্টেশনে দীর্ঘ আট বছর যাবত কর্মরত আছেন।। তিন বছর পর পর বদলির নিয়ম থাকলেও রহস্যজনক কারণে তাঁর বদলি হচ্ছে না।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত গভীর নলকূপগুলোর মধ্যে কোনটায় ট্যাকিং, কোনটায় মোটর আবার কোনটার পাটাতন দেওয়া হয়নি। আবার কোনটিতে গরম পানি উঠে। এ ব্যাপারে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি উপকারভোগীরা।ফলে তারা ১০৫০০ টাকা জমা দিয়ে গভীর নলকূপ নিয়ে এখন চরম বিপাকে পড়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সহকারী প্রকৌশলী তানজিনা আক্তার বলেন, “ঠিকাদারদের বিল এখনো পুরোপুরি পরিশোধ করা হয়নি, কাজ কমপ্লিট করলে তাদেরকে বিল দেয়া হবে।’ আপনার অফিস প্রাঙ্গণে ঠিকাদাররা মালামাল রেখে কাজ করেন, এর কারণ কি? এই প্রশ্নের জবাবে তানজিনা আক্তার বলেন, “আমার এখানে মালামাল রাখলে আমি বুঝতে পারি যে তারা সঠিক জিনিসটা দিয়েছে কিনা। ঠিকাদাররা যদি তাদের গোডাউনে মালামাল রেখে কাজ করেন তাহলে সেখানে দুনম্বরীও হতে পারে।’ একটি সূত্র জানিয়েছে, নিয়মানুযায়ী ঠিকাদাররা তাদের নিজ নিজ গোডাউনে মালামাল রেখে কাজ করবেন।
সংশ্লিষ্ট অফিস প্রাঙ্গণে মালামাল রেখে কাজ করার অর্থই হলো অফিসের কতিপয় লোক দিয়ে সাব- ঠিকাদারী করানো হয়। এরমধ্যে এই অফিসের মেকানিকও রয়েছে। নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পে কি পরিমাণ অনিয়ম করেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে অনেকেরই ধারণা।