আবুনাঈমরিপন: নরসিংদীর পৌর শহরে সাটিরপাড়া, নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিউলি আক্তার একের পর এক দুর্নীতি ও অনিয়ম করে গেলেও তার বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে না কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
এই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নেওয়ায় সে আরো বেপরোয়া ও বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে। অত্র বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও সহকারী শিক্ষকগণ মনে করেন শিক্ষা বিভাগের কোন এক অদৃশ্য শক্তির বলয় শিউলি আক্তার একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে অগণিত অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও শিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। তার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের একাধিক সহকারী শিক্ষক ও কর্মচারীগণ অভিযোগ করিলে নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
উক্ত তদন্ত কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠালে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় রহস্যজনক কারণে এই প্রধান শিক্ষিকা অত্র বিদ্যালয়ে বহাল তরিয়তে আছেন। ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক জাতীয় দৈনিক সহ স্থানীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক ও বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ পত্রিকা গুলোতে ফলাও করে প্রকাশ করা হয়। এ সকল সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর প্রধান শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের স্বরূপ উন্মোচিত হলে সাধারণ মানুষ তার অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করে। অদৃশ্য শক্তির ইশারায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত কমিটি স্থবির হয়ে গেলে সে আরো বেপরোয়া হয়ে যায়। সে বিদ্যালয়ের এল এম এস পদের ছয়জনকে চাকরি চুত্য করে। চাকরি চুত্য হওয়া রওশন আলী, পেয়ারা বেগম, আকলিমা, তামান্না, মিনু ও রাজেশ বর্তমানে সংসার চালাতে গিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করছে। অপরদিকে বিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষক সেলিম সিদ্দিকী ইংরেজি, মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান অংক, তাহমিনা ফেরদৌস ইংরেজি রহস্যজনক কারনে তাদের বদলির আদেশ হয়। তাহার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্বেচ্ছায় বদলী হন জোহরা খাতুন বাংলা। অন্যান্য সহকারী শিক্ষকগণ যারা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তাদের উপর চলছে বিভিন্ন রকমের মানসিক নির্যাতন।
নাম প্রকাশ করার না শর্তে বিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষক কর্মচারী জানায়, প্রধান শিক্ষিকার অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত হওয়ার পর তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তদন্ত হলেও, কোন ব্যবস্থা না হওয়ায় প্রধান শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষকদের বদলি করান। পরবর্তীতে অদৃশ্য শক্তির সহযোগিতায় তার পছন্দের লোক দিয়ে তদন্তের ব্যবস্থা করেন। কয়েকজন শিক্ষক কে হুমকি দিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে পরবর্তী তদন্ত কর্মকর্তার কাছে অভিযোগকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে লিখিত দিতে বাধ্য করেন এবং তার দায়মুক্তির পক্ষে লিখিত নেন। শ্রেণিকক্ষের সিসি ক্যামেরা ও কেন্দ্রীয় সাউন্ড সিষ্টেমের সাহায্যে যখন তখন শিক্ষকদের হুমকি ধামকি অপমান অপদস্ত করতে গিয়ে একদিকে শিক্ষকদের আতংকিত ও হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। প্রধান শিক্ষক ছাত্রীদেরকে টিসি ও প্রমোশন না দেয়ার হুমকি এবং প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন। তাদেরকে দিয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করাচ্ছেন। যাতে করে কোমলমতি শিশুদের বিকাশ ব্যহত হচ্ছে। কিছু ছাত্রী প্রধান শিক্ষিকার আস্কারা পেয়ে সাধারণ ছাত্রীদের উপর অত্যাচার করছে। সাধারণ ছাত্রীরা ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ । শিক্ষকগণ চরম আতংকে আছেন। এছাড়া এক শিক্ষককে ল্যাবরেটরির জিনিস চুরি দায়ে জরিমানা দিতে চাপ দিচ্ছেন অথচ ল্যাবরেটরির চাবি প্রধানে কাছেই থাকে। ল্যাবরেটরিতে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান তলানিতে ধাবিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা শিউলি আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে কোন কথা বলবো না। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ করার না শর্তে বিদ্যালয়ের কিছু অভিভাবক জানায়, প্রধান শিক্ষিকার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে আমাদের সন্তানরা সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে সচেতন মহল মনে করেন অচিরেই শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান না হলে কোমলমতী শিক্ষার্থীরা সুশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।