মোঃ সুমন হোসেন, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা।
এরপর রবিবার মহাঅষ্টমী, সোমবার মহানবমী এবং ২৪ অক্টোবর (মঙ্গলবার) বিজয়া দশমী পালিত হবে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সববয়সী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে নতুন পোশাক কেনার ধুম পড়ে। উৎসবের একেক দিন একেক পোশাকে দেবী দুর্গাকে বরণের আয়োজন আগে থেকেই সম্পন্ন করেন তারা।উৎসবের আগেই উৎসবের আমেজ আসে দল বেঁধে কেনাকাটায়।তবে এবার সেই আমেজ নেই।ব্যবসায়ীরা বলছেন, পূজাকে কেন্দ্র করে নতুন পোশাকের পর্যাপ্ত কালেকশন ও আয়োজন থাকলেও সে অনুযায়ী ক্রেতা নেই। সোমবার (১৬ই অক্টোবর) মুন্সীগঞ্জে ছোট-বড় বিভিন্ন মার্কেট ও শোরুমের ব্যবসায়ী ও দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।পূজার সময় ঘনিয়ে এলেও প্রত্যাশিত বেচাকেনা না হওয়ায় কিছুটা মন ভার দেখা যায় তাদের। সরোজমিনে মুন্সীগঞ্জ সদর, মিরকাদিম পৌরসভার রিকাবী বাজার, সিপাইপাড়া, আলদি বাজার, টংঙ্গীবাড়ী সহ জেলার বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে দেখা যায়, ছুটির দিন হলেও তেমন ক্রেতার সমাগম নেই।
সকাল থেকে রোদের তীব্রতা থাকায় ক্রেতা সমাগম কম বলেও ধারণা অনেকের। কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,দুর্গাপূজায় ছিমছাম পোশাকের কদর বেশি। শরতের মোহনীয় রূপের সঙ্গে মানানসই ধর্মীয় এবং ট্রেন্ডি পোশাক এখন হালফ্যাশনে জায়গা করে নিয়েছে।ধুতি, পায়জামা, পাঞ্জাবি, প্যান্ট, টিশার্ট, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, থ্রীপিস, কুর্তি, জুয়েলারি,শাখা রয়েছে কেনাকাটার পছন্দের তালিকায়।যুক্ত হয়েছে ওয়েস্টার্ন পোশাকও। তাছাড়া পূজায় শাড়ির কদরও থাকে বেশি।সেজন্য জামদানি, ঢাকাই বেনারসি, রাজশাহীর রেশমি শাড়ি, টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি, কাতান শাড়ি,পাবনা শাড়ি, সুতি শাড়ি,মণিপুরী শাড়ি এবং ঢাকাই জামদানির পর্যাপ্ত কালেকশন রাখা রয়েছে।বয়ন, নকশা ও আভিজাত্যের জন্য কলকাতা,রাজস্থানি শাড়িও সংগ্রহ করা হয়েছে।এখন কেবল পর্যাপ্ত ক্রেতার অপেক্ষা। মিরকাদিম পৌরসভার তিন কন্য মার্কেটের কয়েক জন বিক্রয়কর্মী বলেন, গত(শুক্রবার) বিকেলে মার্কেটে ভিড় বেশি থাকলেও ক্রেতা ছিল কম।
সবাই শুধু শাড়ি দেখেছে, কেনাকাটা খুব কম লোকজন করেছে।আজ তো কারো দেখাই পাওয়া যাচ্ছে না।সবাই বাড়তি দামের কথা বলেন।কিন্তু আমরাও তো নিরুপায়। পাইকারি বাজারে বেশি দামে কিনতে হলে খুচরা বাজারে প্রভাব পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। আশা করছি, এই সপ্তাহে ক্রেতা বাড়বে। মার্কেটের জ্যেষ্ঠ ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে সব ধরনের ক্রেতারা আসেন বিধায় অধিকাংশ দোকানেই ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০-১৫ হাজার টাকা দামের শাড়িও রয়েছে।অধিকাংশ ক্রেতাই কিছুটা কম দামের শাড়ি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন দোকানে খোঁজ করছেন।তারাও ক্রেতাদের চাহিদা ও বাজেট অনুযায়ী শাড়ি দেখাচ্ছেন।তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বেচাকেনা তেমন জমে ওঠেনি। এদিকে, বরাবরের মতোই কাপড়ের বাড়তি দাম নিয়ে অভিযোগের কথা জানালেন ক্রেতারা।
দীপা পাল নামের এক ক্রেতা বলেন, মুন্সীগঞ্জের শপিং করতে আসি কিছুটা কম দামে জিনিস পাওয়ার জন্য। কিন্তু এখানকার ব্যবসায়ীরা প্রত্যেকটি জিনিসের অতিরিক্ত দাম চাইছেন। পূজার আগে যেসব শাড়ি ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হতো,সেগুলোর এখন দাম চাইছে ২৫০০ থেকে ২৮০০ টাকা।পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করাটা এক প্রকার দুরূহ ব্যাপার হয়ে গেছে।