মাসুদুর রহমান : মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ধীন জাতীয় মহিলা সংস্থার সরিষাবাড়ী উপজেলার প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাদ্দাম হোসেন সাদ্দামের ওপর স্থানীয় সংসদ সদস্য মুরাদ হাছানের পালিত ক্যাডার মেহেদী হাছান সুজনের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটেছে ।
২৫ অক্টোবর দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুজনকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল ও এলাকাবাসী । মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় চলছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। জানা গেছে, সম্প্রতি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মহিলা সংস্থা পরিচালিত তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের ৩য় ও ৪ র্থ ব্যাচের ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার ৫০ জন ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ফলে গত ১৭ ও ১৮ অক্টোবর ভর্তির জন্য ভাইবা পরীক্ষা নেওয়া হয়। ভাইবায় অনুপস্থিত এক প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণে সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান ডা: মুরাদের পালিত ক্যাডার পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সুজন । প্রশিক্ষণার্থী ভাইবা পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকায় সরিষাবাড়ী উপজেলার প্রশিক্ষণ শাহরিয়ার সাদ্দাম হোসেন সুজনের দাবিটি অস্বীকৃতি জানান। এর বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে সাদ্দাম হোসেন সরিষাবাড়ি রেল স্টেশনে তার বোনকে আনতে গেলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মোড় এলাকায় গেলে সুজনের নেতৃত্বে ৮/১০ জন যুবক গাড়ী গতি রোধ করে সাদ্দামকে মারধুর ও লাঞ্ছিত,মোটর সাইকেল ভাংচুর করে।
এ ছাড়াও সাদ্দামের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয় বলে অনেকেই জানান । পরে তাকে উদ্ধার করে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সাদ্দামের পরিবারের পক্ষ থেকে সরিষাবাড়ী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল। Hide quoted text খোজ নিয়ে জানা যায়, সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের কোন নেতার কাছে স্থান না পেয়ে ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারী মেহেদী হাছান সুজন মুরাদের গ্রুপে যোগদান করে। ইতিপূর্বে ২০১৯ সালে সরকারি কর্মচারীকে কোয়াটার থেকে ডেকে নিয়ে মারধুর, সরিষাবাড়ি অনার্স কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয়দের মারধর করে। সুজনের বিরুদ্ধে অহরহ অভিযোগ রয়েছে। ডা: মুরাদের পালিত ক্যাডার হওয়ায় কাউকে পরোয়ানা করেন না তিনি বলে জানা যায়।হামলার স্বীকার শাহরিয়ার সাদ্দাম জানান,তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের ৩য় ও ৪র্থ ব্যাচের ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার ১৭ ও ১৮ অক্টোবর ভর্তির জন্য ভাইবা নেওয়া হয়। ভাইবায় অনুপস্থিত এক প্রশিক্ষণার্থীকে প্রশিক্ষণে সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান সুজন । আমি দাবিটি অস্বীকৃতি জানাই । এর কারনে আমাকে লাঞ্চিত ও মারধর এবং গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: ছুমাইয়া মনিরা জানান, আহত সাদ্দাম হোসেনকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। আঘাতের কিছু চিহ্ন দেখা গেছে। কোমরে আঘাতের কারণে এক্সরে পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে ।
এ বিষয়ে প্রকল্পের জেলা চেয়ারম্যান আঞ্জুমনোয়ারা হেনা জানান, পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য আমাদের এই প্রশিক্ষণ হচ্ছে। এতে অবৈধ পন্থায় দাবি মেনে নেওয়া সম্ভব নয় । হামলার ঘটনাটি আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে শুনেছি। খোজ খবর নিচ্ছি। এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মহব্বত কবীর মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। এখনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।২৫ অক্টোবর বুধবার দুপুরে জাতীয় মহিলা সংস্থা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য বেগম চেমন আরা তৈয়ব বলেন , প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাদ্দাম হোসেনের ওপর হামলার বিষয়টি শুনলাম । ঘটনাটি যারা ঘটিয়েছে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। আমি জামালপুর জেলার চেয়ারম্যানসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত সবাইকে ডাকতেছি । বিষয়টি আমরা অবশ্যই দেখব ।
মাসুদুর রহমান
০১৯৭৮৫০৫২৪৪